সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫, ০৪:৩৯ পূর্বাহ্ন
জেলা প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ॥
শিক্ষা নিয়ে গড়বো দেশ শেখ হাসিনার বাংলাদেশ ৷ উৎসবমুখর পরিবেশে সারা দেশে যখন বই বিতারণ হচ্ছে বিনামূল্যে, ঠিক সেই সময় বই নিয়ে চলছে রমরমা বাণিজ্য।
সরকারি বই বিনামূল্যে বিতরণের কথা থাকলেও সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়ার গয়হাট্রা সালেহা ইসহাক উচ্চ বিদ্যালয়ে টাকা ছাড়া যেন মিলছে না বই।
একাধিক সূত্র থেকে জানা যায় অত্র স্কুলের সরকারি বই নিতে অফিসকে টাকা না দিলে। বই পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। প্রতিজন ছাত্র/ছাত্রীর কাছ থেকে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ছাত্র/ছাত্রী সহ অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
টাকা ছাড়া মিলেছে না বই বিষয়টি ৭নং পূর্ণিমাগাতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলামিন সরকারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার বাব দাদার সম্পত্তির উপর এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত। এই বিদ্যালয়ের সাথে আমার ছোটবেলার অনেক স্মৃতি জড়িত। এই বিদ্যালয়ে আমি ১ জানুয়ারিতে বিনা মূল্যে বই বিতারন অনুষ্ঠানের উদ্ধোধন করি।
সেই বিদ্যালয়ে যখন শুনতে পারলাম টাকা ছাড়া বই দেওয়া হচ্ছে না। তখন আমি খুবই মর্মাহত হয়েছি।তিনি আরও বলেন যে, আমি একটি চিরকুট পাঠিয়ে ছিলাম প্রধান শিক্ষকের কাছে দরিদ্র ২ জনকে বই দেওয়ার জন্য অনুরোধ করি কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক টাকা ছাড়া বই না দিয়ে আমাকে অকথ্য ভাষায় কথা বলে। এবং তিনি আরও বলে আপনি কে, আপনি বই দেওয়ার জন্য চিরকুট পাঠান।
নবম শ্রেণীর এক ছাত্রের অভিভাবক অভিযোগ করেন যে, আমার ছেলে বই আনতে গেলে প্রধান শিক্ষক সরাসরি বলে দেয় টাকা ছাড়া বই দেওয়া যাবে না। পরে আমি খুব কষ্ট করে তিনশ টাকা দিয়ে ছেলেকে পাঠিয়ে দিলে বিদ্যালয় থেকে বই দেয়।
আরও এক অভিভাবক অভিযোগ করেন যে, প্রধান শিক্ষক টাকা ছাড়া বই দিচ্ছে না । এমনকি প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সাথে হাত মিলিয়ে অনেক দূর্নিতি করছে প্রতিষ্ঠানে। আরও বলেন দূর্বল ছাত্রদের ভয় দেখিয়ে কোচিং করার জন্য চাপ প্রদান করেন। এই বলে কোচিং করলে তাদের পরিক্ষায় উত্তীর্ন করে দেওয়া হবে। নাম প্রকাশে অনিইচ্ছুক
নাম প্রকাশে অনিইচ্ছুক এক ছাত্র বলে আমি অষ্টম শ্রেনী হইতে সকল বিষয়ে উত্তীর্ণ হয়ে নবম শ্রেণীতে উঠেছি কিন্তু আমি বিদ্যালয়ে বই আনতে গেলে আমাকে টাকা ছাড়া বই দেয়নি পড়ে আমি ৩০০ টাকা জমা দিয়ে বই নিয়ে আসি।
টাকা নিয়ে বই দেওয়া বিষয়টি উল্লাপাড়া উপজেলা মধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন। বই বাবদ যদি কেউ কোন টাকা নিয়ে থাকে তাহলে আমি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করবো কোন প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না।
এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলামের সাথে কথা বলতে চাইলে সে বিষয় টি নিয়ে কথা বলতে রাজি না বলে লাইন কেটে দিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেন।
এ বিষয়ে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পান্নার বলেন, এ ধরনের অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা। অনান্য বিদ্যালয়ে ৫০০/৬০০ টাকা করে নিচ্ছে কিন্তু আমরা শুধু সেশন ফি বাবদ ৩০০ টাকা করে নিচ্ছি।
উপজেলার সচেতন নাগরিক সহ ভুক্তভোগী অভিভাবকরা গয়হাট্রা সালেহা ইসহাক উচ্চ বিদ্যালয়ে বই নিয়ে গড়ে উঠা সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের আহবান জানায়।